কুড়ি টাকা ভাগা----------------------

কুড়ি টাকা ভাগা
------------------------------
গলার কাছে অনেক্ষন ধরে অস্বস্তি হচ্ছিল...হ্যাক করে ঢেঁকুর উঠতেই ভিতরটা জ্বলে উঠল। গলা দিয়ে মুরগির মশ্লাদার গন্ধসহ ঝাঁজালো একটা টেষ্ট। বুকটা জ্বলে উঠল। দলা পাকানো থুতু টা মেঝের এককোনে ছুড়ে দিয়ে বিপিন লাশটার দিকে এগিয়ে গেল। বয়স বড়জোড় ষোল হবে মেয়েটার। গতরাতে এসেছে। এসে ইস্তক পুলিশ, নেতা মন্ত্রী শালা আর কত কে যে ঘুরে গেল...যত্ত বাওয়াল। আরে এসব কাজ কি তাড়াতাড়ি হয়! ডাক্তার আসবে , লাশ খুলবে, সব নেড়ে চেড়ে রিপোর্ট দেবে। রেপ টেপ থাকলে আবার অন্য হ্যাপা।  এই মেয়েটা অবশ্য স্কুল থেকে আসার পথে হাইওয়েতে লরির নিচে পড়েছিল।
যাকগে আজকের মত এই লাশটা বের করে দিলেই আজ ছুটি। তাও দেখতে দেখতে নটা বেজে গেছে পা চালিয়ে হাটলে লাষ্ট বনগাঁ লোকাল টা পেয়েই যাবে। 
সব সেরে রাস্তায় পা দিতে দিতে দশটা পার হয়ে গেল। আন্ডারপাসের ভিতরের দোকানগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। একদম শেষ মাথায় একটা আলো জ্বলছে টিম টিম করে। আজ নেশাটা একটু বেশিই চড়েছে... তবু বুঝতে পারল সেই বুড়িটা...মুখের একদিকটা কাপড়ে ঢাকা আগের দিনের মতই। আদা রসুনের ভাগা নিয়ে বসেছে। কাছে যেতেই সেদিনের মতই খনখনে গলায় বলে উঠলো  'বিশ টাকা ভাগা নাও বিশ টাকা'। স্লা এই রাতে কে যে তোর ভাগ নেবে এইরাতে!! বিপিন বিড়বিড় করে। মরার টাইমে এই আঁধারে বসে রসুন বেচছে...যত্তসব!!
বুড়িকে ক্রস করে দুপা এগোতেই শুনতে বুড়ির গলা পেল আজকের টা তো জব্বর রে! কঁচি মাল!
বিপিনের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল।
: রসুন তেল দিস কাঁধে মরার নখের আঁচর বলে কথা।
বিপিনের পা দুটো যেন মাটিতে গেঁথে গেল । আর এগোতে পারছে না। কাঁধের কাছ টা সত্যিই জ্বলছে।  পিছন থেকে সামন্তদার গলা পেল ' তুমি এখনো এখানেই আছ! আসো এক চিলিম মেরে যাও'
বিপিন শ্বাস ফেলে দেখল বুড়ি নেই, তার টিম টিমাটি আলোও নেই। টর্চ মেরে দেখল  রসুনের ভাগা এলোমেলো পড়ে আছে।
সামন্ত দা বল্লো নিয়ে যাই চলো, ন্যাপলাকে বলবো রসুন দিয়ে শুয়ারের ভুড়ি বানাতে। বিপিন বড় করে শ্বাস নিয়ে বল্লো ' হ্যা আর ঐ সাথে একটু রসুন তেল, কাঁধটা জ্বলছে, আজ আঁচর লেগেছে'
সামন্তদা রসুনগুলো উঠিয়ে নিয়ে টর্চ টা নেভাতেই কুড়ি টাকার নোট টা ফেলে বিপিন হাটা লাগালো।

Comments

Popular posts from this blog