'সারানিশ জাগিয়াছি দেখ সব বাসী । কারে বা কহিব আর বোঝা হল দায় । গঙ্গাজলে গঙ্গাজল অঙ্গ ধুয়ে আসি, খুলে দিলে মন কিহে তুলে রাখা যায় ? ' (ঈশ্বর চন্দ্র গুপ্ত)
গ্রামের নাম মনিপুর। গোটা গ্রামটা গড়ে উঠেছে মনিপুর লেপ্রসি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার বলে একটা সংগঠনকে কেন্দ্রে রেখে।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুষ্ঠ আক্রান্ত মানুষ এখানে এসে থাকে। অথবা থাকতে বাধ্য হয়। এরা সমাজ বিচ্যুত। কুষ্ঠরোগী। তবে আজ সেসব কথা থাক। আজ উৎসব।
চারিদিকে সাজ সাজ আবহাওয়া, ডেকি গুলো উঠানে ঠোঁট ঘষতে ঘষতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মোরগ গুলো সন্ধ্যের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিউতি লোকজন হাড়িয়া-চালভাজা নিয়ে সকালবেলার মিঠে রোদ মেখে তাস পিটছে। একটা বছর পাঁচেকের পিচ্চি চিৎকার করে উঠল :ও পিঙ্কি দিদি সাজাইন্দে, দেখ আমার চুলের পম খুইলে গেল। টোটো আসি গেল।
ওরা যাবে বেরো তে, সেখানে পাহাড়ের গায়ে মেলা হচ্ছে।
:ওই দিদি তুর নাম কি বটে?
:তোর নাম কিরে পুঁচকি?
:পুন্নিমে গো। পুন্নিমে বাউরি।
: স্কুলে যাস
: হ। যাই গো। ওই হোথায়। পরীক্ষা হল। রেজাল্ট ভালো হইনছে গো।
: তাই!! তাহলে তো ভোজ খাওয়াতে হয় রে!!
: মোর ঘরকে আয়, মা পিঠা দিবে।
------–---------
:ও মা তুমার ঘর কুথায় গো?
:
:এখন তো বাউনী পূজা হইনছে। রাতে পায়ে তেল লাগাতে হয় বটেক। বাউনী ভুতে আসে পা চাটতে।
:ধুস! আমি নিজেই ভুত
: হ। তুর চুল গুলান ভুতের মতই বটেক।
: ওমা দিদি রাগ করেন নাই। ধন্যবাদ দিদি। কি সোন্দর হাসি। আমাদের গ্রামে আইলেন সেই কলকাতা থিকা, বাচ্চাগুলানরে দ্যাখেন। আমাদের কপাল গো মা...আর বাপের ভিটা দ্যাখা হবেক না গো। চাষের জমি ছিল। সব অভিশাপ গো দিদি। দ্যাখেন মোর হাত গুলান।
: দিদি দুইটা পিঠা খান গো। কাল বানাইছি। আজ এট্টু মুখে দিতে হয়।
ক্যামেরা লজ্জা পায় এসব গ্রামে। সরকারী হিসেব নিকেশ শুধু ভোটবক্সে শেষ হয়। এদিক ওদিক চোখ চালালে দেখতে পাবেন কারো হাতে দু চারটে আঙ্গুল নাই, কারো বা হাত নাই, হাত আছে তো পা নাই, মুখ থেকে নাকটা কে যেন টেনে হিঁচড়ে খুলে ফেলে দিয়েছে। তবে কুষ্ঠতে হাসি ছিনিয়ে নিতে পারেনি। অতএব আমিও মুখে হাসি লেপ্টে ওদেরই দাওয়ায় বসে শীতের রোদ মেখে পিঠে চিবচ্ছি।
পুনশ্চ: এনারাও কুকুর পোষেন, রেলে কাটা এক ঠেঙ্গে মোরগকে যত্ন করে দাওয়ায় বেঁধে রাখেন, নাতী ভালোবেসে নাম দিয়েছে 'রাজু'।
গ্রামের নাম মনিপুর। গোটা গ্রামটা গড়ে উঠেছে মনিপুর লেপ্রসি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার বলে একটা সংগঠনকে কেন্দ্রে রেখে।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুষ্ঠ আক্রান্ত মানুষ এখানে এসে থাকে। অথবা থাকতে বাধ্য হয়। এরা সমাজ বিচ্যুত। কুষ্ঠরোগী। তবে আজ সেসব কথা থাক। আজ উৎসব।
চারিদিকে সাজ সাজ আবহাওয়া, ডেকি গুলো উঠানে ঠোঁট ঘষতে ঘষতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মোরগ গুলো সন্ধ্যের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিউতি লোকজন হাড়িয়া-চালভাজা নিয়ে সকালবেলার মিঠে রোদ মেখে তাস পিটছে। একটা বছর পাঁচেকের পিচ্চি চিৎকার করে উঠল :ও পিঙ্কি দিদি সাজাইন্দে, দেখ আমার চুলের পম খুইলে গেল। টোটো আসি গেল।
ওরা যাবে বেরো তে, সেখানে পাহাড়ের গায়ে মেলা হচ্ছে।
:ওই দিদি তুর নাম কি বটে?
:তোর নাম কিরে পুঁচকি?
:পুন্নিমে গো। পুন্নিমে বাউরি।
: স্কুলে যাস
: হ। যাই গো। ওই হোথায়। পরীক্ষা হল। রেজাল্ট ভালো হইনছে গো।
: তাই!! তাহলে তো ভোজ খাওয়াতে হয় রে!!
: মোর ঘরকে আয়, মা পিঠা দিবে।
------–---------
:ও মা তুমার ঘর কুথায় গো?
:
:এখন তো বাউনী পূজা হইনছে। রাতে পায়ে তেল লাগাতে হয় বটেক। বাউনী ভুতে আসে পা চাটতে।
:ধুস! আমি নিজেই ভুত
: হ। তুর চুল গুলান ভুতের মতই বটেক।
: ওমা দিদি রাগ করেন নাই। ধন্যবাদ দিদি। কি সোন্দর হাসি। আমাদের গ্রামে আইলেন সেই কলকাতা থিকা, বাচ্চাগুলানরে দ্যাখেন। আমাদের কপাল গো মা...আর বাপের ভিটা দ্যাখা হবেক না গো। চাষের জমি ছিল। সব অভিশাপ গো দিদি। দ্যাখেন মোর হাত গুলান।
: দিদি দুইটা পিঠা খান গো। কাল বানাইছি। আজ এট্টু মুখে দিতে হয়।
ক্যামেরা লজ্জা পায় এসব গ্রামে। সরকারী হিসেব নিকেশ শুধু ভোটবক্সে শেষ হয়। এদিক ওদিক চোখ চালালে দেখতে পাবেন কারো হাতে দু চারটে আঙ্গুল নাই, কারো বা হাত নাই, হাত আছে তো পা নাই, মুখ থেকে নাকটা কে যেন টেনে হিঁচড়ে খুলে ফেলে দিয়েছে। তবে কুষ্ঠতে হাসি ছিনিয়ে নিতে পারেনি। অতএব আমিও মুখে হাসি লেপ্টে ওদেরই দাওয়ায় বসে শীতের রোদ মেখে পিঠে চিবচ্ছি।
পুনশ্চ: এনারাও কুকুর পোষেন, রেলে কাটা এক ঠেঙ্গে মোরগকে যত্ন করে দাওয়ায় বেঁধে রাখেন, নাতী ভালোবেসে নাম দিয়েছে 'রাজু'।









Comments