চর্বিত চর্বন -2
First They killed My Father... Angelina Jolie র পরিচালিত সিনেমা। কম্বোডিয়ার রক্তাক্ত ইতিহাসের কাহিনী। খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়। 1975 সালের ঘটনা। প্রায় দুমিলিয়ন কম্বোডিয়ান নিহত হয় যুদ্ধে। সেই সময় পাঁচ বছরের মেয়ে Lounge Ung এর জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার গল্প। এই গল্প শুনতে শুনতে যাচ্ছিলাম কুলের মাউন্টেন বলে এক পাহাড় ও ঝরনা দেখতে। মিষ্টার টি আমাদের গাইড। তিনি নানারকম গল্প করতে করতে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের কিছু বিশেষ জাগায়। তার মধ্যেই একটা কুলেন মাউন্টেন। কুলেন শুনে ভাবলাম ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল বিষয়। কিন্তু মিষ্টার টি বললেন কুলেন মানে লিচু। এই পাহাড়গুলোতে একসময় লিচুগাছ ভর্তি ছিল। এখন যদিও সেরকম কিছু চোখে পড়ল না। তো সেই পাহাড়ে পৌছে দেখলাম চারিদিকে এক বিশাল ঝরনা। প্রচুর মানুষ চান করছে।
যথারীতি ফাঁকিবাজি বিদ্যে। এই জায়গা সমন্ধে কিছুই জানিনা। চানের পোষাক আনিনি। তবে সারাক্ষণ বৃষ্টি হচ্ছে বলে একসেট এক্সট্রা পোষাক ছিল সাথে। দেখা গেল অজস্র বিকিনীপরিহিতাদের মাঝে আমি জামা কাপর পরে জলে ঝপাশ। কথায় আছে 'যস্মিন দেশে যদাচার'। তা এত স্বল্পপবসনাদের মাঝে নিজেকে কেমন এলিয়েন মনে হচ্ছিল । এইরকম অবস্থায় দুজন কানাডিয়ান মহিলা এগিয়ে এসে আমার নাম ধাম সাঁতার জানি কিনা জিগাইলো। আমি ভাবলাম এই বুজি কান ধরে জল থেকে উঠিয়ে দেবে। আমি যে সাঁতরাতে অপারগ। উল্টে তারা আমায় ধরে ধরে একেবারে ঝরনার নিচে নিয়েগিয়ে বসিয়ে দিল। লোকাল ফটোগ্রাফারও খচাৎ করে ছবি উঠিয়ে নিল। পাহাড়ের খাজেই প্রিন্টার রাখা। কপিও দিল। এইসবের ফাকে এক ব্রিটিশ মহিলা এসে অনেক গল্প করলেন। তার নাতি নাতনীর সাথে আলাপ করালেন ও নেক্সট ট্রিপ ব্রিটেনে করার পরামর্শ দিলেন।
আমি বলে আসার পথে মালয়েশিয়ায় নেমে ছডলারে ব্রেকফাসট করে ফিরে যাব ভাবছিলাম । কোথায় ব্রিটেন। ঝাকগে সে সব দুঃখুকথা।
প্রচুর জগঝম্প দিয়ে চান করে ফেরার পথে বুদ্ধ মন্দির আর কি কি সব দেখে নানা কিছু খেয়ে হোটেলে ফিরলাম ।
যাচ্ছিলাম Floating ভিলেজ দেখতে সিয়ম রিপ থেকে কামপঙ ফুলুক ( Kampong Phluk)গ্রাম মেকঙ নদীর কাছে। ছোট্ট গ্রাম। মেরেকেটে শপাঁচেক বাসিন্দা। চারিদিকে জল, আঁশটে গন্ধ, শুকনো মাছ, এমনকি রাধা ভাতও শুকোচ্ছে কোথাও কোথাও ।
আমরা বেশ কয়েকটা আলাদা গ্রুপ স্টীমারে করে রওনা দিলাম। পৃথিবীর যেকোন টুরিস্ট গ্রুপের টিপিকাল কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে: একদল লোক আছে যারা নিজের বাড়ির রান্নাঘর আর বাথরুমের ঝাটা- বালতি বাদে দুনিয়ার অবশিষ্ট জিনিষ দেখে আবেগে বলে ওঠে হাউউউ রোমান্টিক!!
আবার আর একপ্রকার লোক আছে তারা কোনকিছুতেই ইমপ্রেস হয়না। বস্তুতঃ তারা বেড়াতে আসে কেন সেটাই গবেষণার বিষয়।
এরবাইরেও আর দুটো ক্যাটেগরি আছে। একদল ছবি তোলে। আর একদল ছবি তোলায়। প্রথম দলের দাবী থাকে পৃথিবীর যাবতীয় মাঠঘাট -ফুলফল মায় কেঁচোটার সাথেও তার একটা ছবি তুলে দিতে হবে। মুশকিল টা হল দ্বিতীয় দলকে নিয়ে। তারা শুধুমাত্র ছবি তুলে খুশি হই না। তারা চায় ছবি তোলার মত মহৎ কর্মটি সমাধা হইবার পূর্বে যখন তাহারা এহেন কার্যে আত্মসমাহিত ; সেই অবস্থায় তার একটি ছবি।
যাইহোক আমিও আমার ফটোগ্রাফারের নানাবিধ আবদার মেটাতে মেটাতে খেয়াল করলাম এক সাহেব পোজ দিচ্ছে আর সাহেবনি ছবি তুলছে। সাহেবের গলায় ঝুলছে ক্যামেরা। আর সাহেবনি মোবাইলে বিষয়টা নথিবদ্ধ করছে। স্টীমারে ফিরে ভাল ভিউয়ের আশায় ছাদে উঠে বসলাম। তখনই দেখলাম সেই সাহেবজুটি বিজাতীয় ভাষায় ঝগড়া করছে। ঝগড়ার বিষয় যা বোঝা গেল সাহেবনির তোলা মোবাইলেরছবি যথাযথ হয়নি।
আমি বুজলাম দ্যাশ , ভাষা আলাদা হলেও ওই সাহেবনি আর আমার দুঃখ এক। মানে আমরা
আক্ষরিক ভাবে একই বোটের যাত্রী। ঝটপট একটা ছবি তুলে ফেললাম সাহেবনির সুন্দর পদযুগলের আর সাহেব কে দেখানো মাত্র বললে বিশ্বাস করবেন না রাগ এক্কেরে গলে জল।
আপনারাও দেখুন রাগ কমে যাবে। তবে হ্যা নিজ দায়িত্বে দেখুন। গিন্নিদের রাগের দায়িত্ব নিজেরাই নিন।
#কম্বোডিয়াভ্রমন
First They killed My Father... Angelina Jolie র পরিচালিত সিনেমা। কম্বোডিয়ার রক্তাক্ত ইতিহাসের কাহিনী। খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়। 1975 সালের ঘটনা। প্রায় দুমিলিয়ন কম্বোডিয়ান নিহত হয় যুদ্ধে। সেই সময় পাঁচ বছরের মেয়ে Lounge Ung এর জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার গল্প। এই গল্প শুনতে শুনতে যাচ্ছিলাম কুলের মাউন্টেন বলে এক পাহাড় ও ঝরনা দেখতে। মিষ্টার টি আমাদের গাইড। তিনি নানারকম গল্প করতে করতে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের কিছু বিশেষ জাগায়। তার মধ্যেই একটা কুলেন মাউন্টেন। কুলেন শুনে ভাবলাম ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল বিষয়। কিন্তু মিষ্টার টি বললেন কুলেন মানে লিচু। এই পাহাড়গুলোতে একসময় লিচুগাছ ভর্তি ছিল। এখন যদিও সেরকম কিছু চোখে পড়ল না। তো সেই পাহাড়ে পৌছে দেখলাম চারিদিকে এক বিশাল ঝরনা। প্রচুর মানুষ চান করছে।
যথারীতি ফাঁকিবাজি বিদ্যে। এই জায়গা সমন্ধে কিছুই জানিনা। চানের পোষাক আনিনি। তবে সারাক্ষণ বৃষ্টি হচ্ছে বলে একসেট এক্সট্রা পোষাক ছিল সাথে। দেখা গেল অজস্র বিকিনীপরিহিতাদের মাঝে আমি জামা কাপর পরে জলে ঝপাশ। কথায় আছে 'যস্মিন দেশে যদাচার'। তা এত স্বল্পপবসনাদের মাঝে নিজেকে কেমন এলিয়েন মনে হচ্ছিল । এইরকম অবস্থায় দুজন কানাডিয়ান মহিলা এগিয়ে এসে আমার নাম ধাম সাঁতার জানি কিনা জিগাইলো। আমি ভাবলাম এই বুজি কান ধরে জল থেকে উঠিয়ে দেবে। আমি যে সাঁতরাতে অপারগ। উল্টে তারা আমায় ধরে ধরে একেবারে ঝরনার নিচে নিয়েগিয়ে বসিয়ে দিল। লোকাল ফটোগ্রাফারও খচাৎ করে ছবি উঠিয়ে নিল। পাহাড়ের খাজেই প্রিন্টার রাখা। কপিও দিল। এইসবের ফাকে এক ব্রিটিশ মহিলা এসে অনেক গল্প করলেন। তার নাতি নাতনীর সাথে আলাপ করালেন ও নেক্সট ট্রিপ ব্রিটেনে করার পরামর্শ দিলেন।
আমি বলে আসার পথে মালয়েশিয়ায় নেমে ছডলারে ব্রেকফাসট করে ফিরে যাব ভাবছিলাম । কোথায় ব্রিটেন। ঝাকগে সে সব দুঃখুকথা।
প্রচুর জগঝম্প দিয়ে চান করে ফেরার পথে বুদ্ধ মন্দির আর কি কি সব দেখে নানা কিছু খেয়ে হোটেলে ফিরলাম ।
যাচ্ছিলাম Floating ভিলেজ দেখতে সিয়ম রিপ থেকে কামপঙ ফুলুক ( Kampong Phluk)গ্রাম মেকঙ নদীর কাছে। ছোট্ট গ্রাম। মেরেকেটে শপাঁচেক বাসিন্দা। চারিদিকে জল, আঁশটে গন্ধ, শুকনো মাছ, এমনকি রাধা ভাতও শুকোচ্ছে কোথাও কোথাও ।
আমরা বেশ কয়েকটা আলাদা গ্রুপ স্টীমারে করে রওনা দিলাম। পৃথিবীর যেকোন টুরিস্ট গ্রুপের টিপিকাল কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে: একদল লোক আছে যারা নিজের বাড়ির রান্নাঘর আর বাথরুমের ঝাটা- বালতি বাদে দুনিয়ার অবশিষ্ট জিনিষ দেখে আবেগে বলে ওঠে হাউউউ রোমান্টিক!!
আবার আর একপ্রকার লোক আছে তারা কোনকিছুতেই ইমপ্রেস হয়না। বস্তুতঃ তারা বেড়াতে আসে কেন সেটাই গবেষণার বিষয়।
এরবাইরেও আর দুটো ক্যাটেগরি আছে। একদল ছবি তোলে। আর একদল ছবি তোলায়। প্রথম দলের দাবী থাকে পৃথিবীর যাবতীয় মাঠঘাট -ফুলফল মায় কেঁচোটার সাথেও তার একটা ছবি তুলে দিতে হবে। মুশকিল টা হল দ্বিতীয় দলকে নিয়ে। তারা শুধুমাত্র ছবি তুলে খুশি হই না। তারা চায় ছবি তোলার মত মহৎ কর্মটি সমাধা হইবার পূর্বে যখন তাহারা এহেন কার্যে আত্মসমাহিত ; সেই অবস্থায় তার একটি ছবি।
যাইহোক আমিও আমার ফটোগ্রাফারের নানাবিধ আবদার মেটাতে মেটাতে খেয়াল করলাম এক সাহেব পোজ দিচ্ছে আর সাহেবনি ছবি তুলছে। সাহেবের গলায় ঝুলছে ক্যামেরা। আর সাহেবনি মোবাইলে বিষয়টা নথিবদ্ধ করছে। স্টীমারে ফিরে ভাল ভিউয়ের আশায় ছাদে উঠে বসলাম। তখনই দেখলাম সেই সাহেবজুটি বিজাতীয় ভাষায় ঝগড়া করছে। ঝগড়ার বিষয় যা বোঝা গেল সাহেবনির তোলা মোবাইলেরছবি যথাযথ হয়নি।
আমি বুজলাম দ্যাশ , ভাষা আলাদা হলেও ওই সাহেবনি আর আমার দুঃখ এক। মানে আমরা
আক্ষরিক ভাবে একই বোটের যাত্রী। ঝটপট একটা ছবি তুলে ফেললাম সাহেবনির সুন্দর পদযুগলের আর সাহেব কে দেখানো মাত্র বললে বিশ্বাস করবেন না রাগ এক্কেরে গলে জল।
আপনারাও দেখুন রাগ কমে যাবে। তবে হ্যা নিজ দায়িত্বে দেখুন। গিন্নিদের রাগের দায়িত্ব নিজেরাই নিন।
#কম্বোডিয়াভ্রমন

Comments