পিয়া তোরা ক্যায়সা অভিমান:

এই গানটা শুনলেই খুব অভিমান হয়। এটাও বলে দিতে হবে নাকি ক্যায়সা অভিমান!! ধুস্ এভাবে হয় নাকি! খুব ছোটবেলায় যখন মিশনারী হোস্টেলে থাকতাম তখন সব বিষয়ে আমার অপার কৌতুহল তর্ক করা স্বভাবের জন্য হামেশাই ঝুট ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তাম। তখন সারা দুনিয়ার ওপর অভিমান হত। মনে হত এই পৃথিবী যথেষ্ট নয় আমাকে বোঝার জন্য ।
 চোখ বন্ধ করেই কেন প্রেয়ার করতে হয় বা মিশনারী পজিশনের সাথে মিশনের কি সম্পর্ক এই সকল  গুরুতর বিষয়ে আলোচনার মত সঙ্গী খুব কম পেতাম। চারিপাশে সবাই ধর্মভীরু আপাতভাবে সব কিছু মেনে নেওয়া লোকজনে ভর্তি । তবু এরই মাঝে আমার এক বন্ধু হল। আমরা লুকিয়ে বামুনের মেয়ে বা দেবদাস পড়তাম। তখন এগুলোই নিষিদ্ধ বই । তো সেই বন্ধুর জন্মদিন । তার মা টিফিন ক্যারিয়ারে ভর্তি  খাবার এনেছে আর  সবাই মিলে হামলে পড়লাম। কিছুটা খাবার পর দেখলাম দু’তিন জন আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে খাওয়া থামিয়ে। বক্সে গরুর মাংস ছিল।

মিশনারী হলেও আমাদের হোস্টেলে মুরগী আর পাঠা/খাসিই হত। তো এই নতুন মাংস খেয়ে আমি বুজলাম পৃথিবীটা আক্ষরিক অর্থেই সুন্দর খাবার দাবারে ভর্তি। খুজে এবং খুটে খাও। ঠিক যেমন পাকা কদমফুল কুড়িয়ে নুন লঙ্কা দিয়ে মেখে খেলে মুখে যে অমৃত স্বাদ লাগে  তা আগে জানতাম না।  খুব অভিমান হল যখন কলেজ লাইফে কিছু বন্ধুর টিফিন বক্স থেকে খাবার খাওয়ার পর তাদের মুখে পৈশাচিক আনন্দ দেখে। কারন তারা এক হিন্দুকে গরু খাইয়ে জাত নেওয়ার আনন্দে  আমোদিত।  জাত তো আমার কোনোকালেই নেই । জনম আমার হিন্দুঘরে। আবার এই বান্দাই অল ইন্ডিয়া বাইবেল কমপিটিশনে সেকেন্ড হয়েছিল। চার্চে সারমন দেওয়ার অভিজ্ঞতাও হয়েছে।

এইবার একটা মজার কথা বলি। মাধ্যমিকের রেজাল্ট আনতে যাচ্ছি। রাস্তায় দুজন বন্ধুর সাথে দেখা। বললো মৌলালী মসজিদের জল পড়া মাথায় দিয়ে যাব। গেলাম । খুদায়ে খিদমত! সেদিন রেজাল্ট অনুযায়ী এই তিনজনের  মধ্যে  আমিই পাশ করেছিলাম । দুই বন্ধুর ধর্ম জানিতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।

ইদানিং খুব  অভিমান হয়

যখন কেউ বলে আপনিতো আসিফার বেলায় কিছু বললেননা। আরে আমি তো অমৃতা, আকাঙ্খা(যাখুশি নাম হতে পারে)বেলাতেও  কিছু বলি নি। আমি তো দেখেছি অন্তর্বাস  (যার অধিষ্ঠান অন্তরে নয়) বেরিয়ে থাকলে বন্ধুরা চোখ রাঙায়। অন্তর্বাস পরবে কিন্তু চুপি চুপি। কেউ যেন জানতি না পারে। বক্ষযুগল থাকতি হবে , সবাই জানবে আছে কিন্তু তাকে চেপে বেধে র‌্যাপ করে লুকিয়ে রাখতি হয়। লুকজন চোখ রাঙায় এসব কথায়।  যখন বলি ভাত কাপড়ের দায়টা কেবল পুরুষ নেয় কেন? মহিলারা চোখ রাঙায়।

আসলে আমি ধর্মেও নেই, জিরাফেও না।
আসলে আমি ঠিক ততটা নারীও নই যতটাই পুরুষ না
ঠিক ততটাও ভাল নই; আবার খারাপও না।
আজকাল খুব অভিমান হয়।
নিজের উপর অভিমান  হয়।I

Comments

Subhankar Paul said…
কোনও কথাই হবে না

Popular posts from this blog